রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

হাড় মজবুত করে নুনে শাক, নিরাময় করে কাশি

হাড় মজবুত করে নুনে শাক, নিরাময় করে কাশি

সংগৃহীত

নুনিয়া শাক বা নুনে শাক অত্যন্ত উপকারী খনিজ লবণ সমৃদ্ধ শাক। আদি ঢাকাইয়া কুট্টিরা নুনিয়া শাক ও গরুর মাংস দিয়ে রান্না করে বিচিত্রধর্মী ও অপূর্ব স্বাদের নুইন্না গোশত। যা পুরান ঢাকার একটি সিগনেচার ডিশ।

নুনে শাক একটি বর্ষজীবী, রসাল, গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Portulaca oleracea। এটি Portulacaceae পরিবারের উদ্ভিদ। অন্যান্য স্থানীয় নাম বুল খুরিয়া শাক, নুনে শাক, নুন খুড়িয়া, নুইন্না শাক, নূনতা শাক, চিড়া শাক, নুনিয়া শাক।

নুনে শাক একটি অনাবাদি উদ্ভিদ। এটি জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে আখের ক্ষেত এবং অন্যান্য সবজি ক্ষেতে বেশি পরিমাণে জন্মে। বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে বছরের যে কোনো সময় ফুল ফোটে। পাতা গুচ্ছের মাঝখানে একটি করে ফুল ফুটে। ফল পাকার পরে ফেটে বীজ ঝরে পড়ে। লম্বা শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করে এবং খরার সময় টিকে থাকে। নুনে শাকের পাতা তেলতেলে, রসালো এবং গাঢ় সবুজ রঙের। এই শাক অন্যান্য শাকের সাথে মিশিয়ে ভাজি করা হয়। স্বাদ একটু লোনতা এবং টক ধরনের।

পুষ্টি উপাদানের বিবেচনায় একটি উন্নতমানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সমৃদ্ধ শাক। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, থাইয়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যারোটিনসহ মানবদেহের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান। এছাড়া এতে রয়েছে ওমেগা-৩ এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি এসিড যা হার্টের জন্য খুবই উপকারী। এতে খনিজ পদার্থের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনিসিয়াম, পটাশিয়াম এবং আয়রন। প্রতিগ্রাম নুনে শাকে ০.০১ মিলিগ্রাম ইকোচ্যাপেনটানিক এসিডও রয়েছে। এই শাক বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। নুনে শাক ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ঔষধি ব্যবহার

১. নুনে শাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনিসিয়াম যা শরীরের হাড়কে মজবুত করে।
২. নুনে শাকে রয়েছে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
৩. চোখ উঠলে চোখে ময়লা জমে চোখ খোঁচা খোঁচা ভাব হয়। এক্ষেত্রে নুনে শাকের রস দিলে সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৪. নুনে শাকের রস কিছুক্ষণ মুখে ধরে রেখে ফেলে দিবেন এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে তোতলামিও ভালো হবে।
৫. বিষাক্ত কোনো কিছু লেগে গা চুলকালে নুনে শাক বেটে উষ্ণ করে প্রলেপ দিলে জ্বালা ও চুলকানি ভালো হয়ে যায়।
৬. নুনে শাক থেঁতো করে এই রস হালকা গরম করে সেবন করলে বাচ্চাদের কাশি ভালো হয়।
৭. নুনে শাক থেঁতো করে এই রস হালকা গরম করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে সকাল-বিকেল সেবন করলে আমাশয় ভালো হয়।
৮. এই শাক যকৃৎ, স্পিলিন, কিডনি, ডায়াবেটিস, এ্যাজমা ও  হৃদ্‌রোগে উপকারী।

সূত্র: dhaka Post

সর্বশেষ: