সংগৃহীত
আরো একবার মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব। গত ৫০ বছরে দীর্ঘতম ও বিরল এক সূর্যগ্রহণ দেখতে পাবে দুনিয়াবাসী। বেশ খানিকটা সময়ের জন্য সূর্য পুরোপুরি ঢাকা থাকবে চাঁদের ছায়ায়। আর এই দৃশ্যটি পৃথিবী থেকে দেখতে কেমন দেখা যাবে ও এর কোনো প্রভাব পৃথিবীতে পড়তে পারে কিনা সেটা নিয়ে চলছে তুমুল বিশ্লেষণ। তবে, ধারণা করা হচ্ছে এবারের সূর্যগ্রহণের ফলে অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে পৃথিবীর একঅংশ, যা নিয়ে কৌতুহলে মেতেছে পুরো বিশ্ব।
সূর্যগ্রহণটি বিভিন্ন কারণে বিশেষ হবে। কারণ, এই দিনে চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে দূরত্ব হবে মাত্র ৩ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার, যা তাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকটতম দূরত্ব। তাই চাঁদকে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় দেখাবে। এবারের সূর্যগ্রহণের আরেকটি আকর্ষণীয় দিক হল, ঘটনার সময়। সূর্যের ১১ বছরের ঘটনাচক্রের চূড়ান্ত পর্যায়ের সঙ্গে সূর্যগ্রহণটি মিলে যাবে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী ৮ এপ্রিলের পর ২১৫০ সালে এই বিরল সূর্যগ্রহণের দেখা মিলবে। বিশ্বের একাধিক প্রান্ত থেকে দেখা যাবে বছরের এই প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণটি। এটি ৭ দশমিক ৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হবে। বিশ্লেষকরা বলছে, এত দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ ৫০ বছরের মধ্যে একবার ঘটে।
আগামী ৮ এপ্রিল মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সম্পূর্ণ সূর্যগ্রহণের কারণে এসব অঞ্চল সম্পূর্ণ অন্ধকারে ঢেকে যাবে। ফলে লাখ লাখ মানুষ এই বিরল ঘটনা উপভোগ করতে পারবে। তবে, এশিয়ার জ্যোতির্বিদেরা এ ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন না। কিন্তু, লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে কিছুটা হলেও উপভোগ করার ব্যবস্থা থাকবে।
এই দৃশ্য সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে, আমেরিকা-কানাডা সীমান্তের নায়াগ্রা জলপ্রপাত থেকে। ওই দিন কয়েক লাখ দর্শনার্থীকে স্বাগত জানাতে কানাডার অন্টারিয়ো প্রদেশের নায়াগ্রা ফলস শহরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রশাসন। নায়াগ্রার প্রশাসন জানিয়েছে, সূর্যগ্রহণ দেখতে জলপ্রপাতের সামনে ১০ লাখের বেশি মানুষ জড়ো হতে পারে। তাই ভিড় সামলাতেই এই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, এশিয়ার জ্যোতির্বিদেরা বলছেন ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাতের বেলা এই গ্রহণ দেখা যাবে। ফলে পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময় কালো ছায়ায় ঢাকা সূর্যের সাক্ষী সেদিন বাংলাদেশ হবে না। রাতে ৯টা ৪২ মিনিটে শুরু হবে সূর্যগ্রহণের পালা। শেষ হবে রাত ২টা ৫২ মিনিটে। রাত ১০টা ৪০ মিনিট থেকে পূর্ণ গ্রাসের শুরু হবে। তাই, এই দৃশ্য দেখতে কৌতুহলী হয়ে অপেক্ষা করছে পৃথিবীর মানুষ। কী হতে চলেছে ৮ এপ্রিল। তবে, সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হতে অপেক্ষা করতে হবে সেই ক্ষণ পর্যন্ত।