সংগৃহীত
অন্তঃকর্ণে কোনো সমস্যা হলে শ্রবণক্ষমতা কমে যায়। তখন তাকে বলে সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস। অভ্যন্তরীণ কানের সংবেদনশীল কোষ বা মস্তিষ্কে শ্রবণ সংক্রান্ত নার্ভের পথে কোনও সমস্যা থাকলেও সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস হয়। অর্থাৎ ককলিয়ার বা ককলিয়ার থেকে ব্রেনের মধ্যে সংযোগকারী নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মস্তিকে শব্দের সিগন্যাল পৌঁছয় না। ফলে শোনার শক্তি থাকে না।
হঠাৎ মনে হয় শোনার শক্তি হারিয়েছেন। এর কারণ সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস। কেন হয় এই সমস্যা? শ্রবণক্ষমতা কীভাবে ফিরে পাবেন? এ বিষয়ে সমাধান দিয়েছেন, ভারতের এইচপি ঘোষ হাসপাতালের ইএনটি সার্জন ডা. অশোক সাহা।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, শব্দদূষণের কারণে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়। লাউড সাউন্ড, উচ্চস্বরে গান শোনা, ট্র্যাফিক, গাড়ির হর্ন ইত্যাদি যান্ত্রিক শব্দের গভীরতা খুব তীব্র হলে ও এবং এমন পরিবেশের মধ্যে থাকলে সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৮৫ ডেসিবলের উপরের কোনও শব্দ অন্তঃকর্ণে ধাক্কা খেলে অন্তঃকর্ণের শ্রবণশক্তি লোপ পায়। কোনও কারণে অটোইমিউন ডিজঅর্ডার হলেও হঠাৎ করে কানে শুনতে পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে হয়তো দেখা গেল, ককলিয়ার নার্ভে রক্ত চলাচলের পথ ড্যামেজ হয়ে গিয়েছে।
ধরা যাক, হঠাৎ তিন দিনের মধ্যে কেউ ৩০ ডেসিবলের বেশি হিয়ারিং লস হয়েছে তখন তাকে সাডেন সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস বলে। এক্ষেত্রে সাধারণত একটা কানের শ্রবণক্ষমতা
লোপ পায়।
জেনে রাখা দরকার, বয়সজনিত কারণে শোনার সমস্যা দু’কানে বেশি হয়। এক্ষেত্রে একটু একটু করে শ্রবণ ক্ষমতা কমতে থাকে। ককলিয়ার থেকে ব্রেনের মধ্যে লিঙ্ক করা নার্ভে যে রক্ত চলাচল করে, তার পথ হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে ভাস্কুলার হিয়ারিং লস হয়। এটাও আচমকা হতে পারে।
শনাক্তকরণে কোন টেস্ট?
সাধারণ শ্রবণক্ষমতার মানুষ শব্দের মাত্রা ২৫ ডেসিবলের মধ্যে থাকলে শুনতে পায়। শব্দের মাত্রা ২৫-৪০ ডেসিবলের মধ্যে থাকলে তাকে বলে অল্প হিয়ারিং লস। ৪০-৫৫ ডেসিবলের মধ্যে হিয়ারিং লসকে বলে মডারেট লস। হিয়ারিং লসের মাত্রা ৫৫-৭১ ডেসিবলের উপরে থাকলে তাকে বলে সিভিয়ার হিয়ারিং লস। অডিওমেট্রি টেস্ট করে বোঝা যায় হঠাৎ করে শ্রবণক্ষমতা কতটা লোপ পেল। এছাড়া ক্লিনিক্যালি টিউনিং ফর্ক টেস্ট করা হয়। ভাইব্রেটিং টিউনিং ফর্কটি (৫১২ হার্জ) কপালের মধ্যভাগে স্পর্শ করার পর বোঝা যায় রোগীর সেন্সরি নিউরাল হিয়ারিং লস হয়েছে নাকি কন্ডাক্টিভ হিয়ারিং লস হয়েছে? একে ওয়েবার’স টেস্টও বলা হয়। যদি সেন্সরির নিউরালের সমস্যা হয় তা হলে ওয়েবার’স টেস্টের সাউন্ড ভাইব্রেশন ভালো কানের দিকে শিফট হবে।
খুব জোরে মিউজিক চালালে বা হেডফোনের সাউন্ড বেশি রাখলে এই সমস্যা বাড়ে। তীব্র আওয়াজ অন্তঃকর্ণে যে শ্রবণ কোষ (হিয়ার সেল) থাকে, তাকে দুর্বল করে দেয়। মোবাইল ফোনের হেডফোন ব্যবহার করে কথা বলতে হলে টানা ৩০ সেকেন্ডের বেশি কখনওই কথা বলা উচিত নয়। জোরে গান শুনবেন না। যানজট, ট্র্যাফিক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকার চেষ্টা করবেন।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট