শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

মূত্রাশয়ের সমস্যায় উপকারী নীল গাছ

মূত্রাশয়ের সমস্যায় উপকারী নীল গাছ

সংগৃহীত

নীল গুল্ম জাতীয় এক প্রকারের উদ্ভিদ। এর Indigofera tinctoria Linn। এটি শীম পরিবারভুক্ত একটি উদ্ভিদ। এর অন্যান্য স্থানীয় নাম নিলিনী, রঞ্জনী, গ্রামিনিয়া, কালোকেশী, নীল পুষ্প, মধুপত্রিকা। এটি Fabaceae পরিবারের সদস্য।

এই উদ্ভিদ থেকে প্রাকৃতিক নীল রং উৎপাদন করা হয়। নীল পানিতে দ্রব্য গুকোসাইড নামক রাসায়নিক হিসাবে থাকে। নীল প্রজাতির চেহারা অত্যন্ত পরিবর্তনশীল কিন্তু সাধারণত যৌগিক পাতা সহ সিল্কি বা লোমযুক্ত হয়। গোলাপ, বেগুনি বা সাদা ফুল শোভাময় স্পাইক বা ক্লাস্টারে জন্মায় এবং ফল হল একটি শুঁটি, সাধারণত বীজের মধ্যে একটি পাতলা বিভাজন থাকে। 

নীল গাছ কেটে বড় কড়াইতে জলের মধ্যে প্রায় ১২ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখলে তা থেকে সবুজ রং এর নির্যাস বের হয়। এরপর এই নির্যাস নতুন পাত্রে ঢেলে এই দ্রবনকে কাঠি দিয়ে অনেকক্ষণ নাড়তে হয় যাতে নীল বাতাসের অক্সিজেন এর সংস্পর্শে আসে। এর ফলে অদ্রাব্য নীল এর তলানী নিচে জমা হয় এবং পরে তা পৃথক করে শুকিয়ে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। ইন্ডিগোটিন ছাড়া তাতে অন্যান্য পদার্থ থাকে তার মধ্যে ইন্ডিরুবাইনম ইন্ডিগো গ্রিন ও ইন্ডিগো ব্রাউন।

প্রাচীনকালে মিশর, গ্রিস ও রোমের লোকেরাও নীলের কথা জানতো। মিশরের ১৮তম রাজবংশের মমি গুলি নীল রং এর কাগজে মোড়া থাকতো। এই উপমহাদেশের মাটি নীল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় ব্রিটিশ নীলকরেরা বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করে নীলচাষে। নদীয়া, যশোর, বগুড়া, রংপুর প্রভৃতি জেলায় নীলচাষ ব্যাপকভাবে করা হতো। উনিশ শতকের শেষের দিকে নীলচাষ অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক না হওয়ায় কৃষকরা ধান ও পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

ব্রিটিশ নীলকরেরা অত্যাচার আর নিপীড়নের মাধ্যমে নীলচাষে বাধ্য করলে ১৮৫৯-৬০ সালে নীল চাষীরা এর বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলে। এর পরে বাংলায় নীল চাষ ক্রমে বিলুপ্ত হয়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নীলের আছে প্রশস্তি। নীল গাছ বাংলাদেশ ও সর্বত্র জন্মায়। আধুনিক কবিরাজি চিকিৎসায় নীল গাছের শিকড় ও পাতার রস নানা অসুখে ব্যবহৃত হয়।

ঔষধিগুণ:

১. নীল গাছের পাতার রস খেলে হুপিং কফ নিবারক হয়।

২. মূত্রাশয়ের সমস্যা হলে নীল গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।

৩. নীল গাছের পাতার রস খেলে বুক ধড়ফড়ানির সমস্যা কমে যায়।

৪. নীল গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে প্লীহা ও যকৃতবৃদ্ধি ভালো হয়।

৫. নীল গাছের পাতার রস মৃগীরোগীকে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: