বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

চুরি করতে গিয়ে বই পড়ায় বুঁদ চোর, অতঃপর…

চুরি করতে গিয়ে বই পড়ায় বুঁদ চোর, অতঃপর…

সংগৃহীত

চুরি করতে এসে বই পড়ায় বুঁদ হয়ে গেলো এক চোর। ভুলে গেলো ঠিক কি করতে এসেছিল সে। গ্রিক পুরানের ওই বইটিতে সে এতটাই মজেছিল যে, বাড়ির মালিকের কাছে ধরা পড়ে যেতো হলো জেলে। ইতালির রাজধানী রোমে ঘটেছে এমনই মজার এক ঘটনা।

এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বাড়িটিতে চুরি করার সময় হঠাৎ তার চোখ পড়ে গ্রিক পুরানের ওই বইটিতে। চুরির মাঝেই বইটি হাতে নিয়ে কখন যে গ্রিক পুরানের দুনিয়ায় নিজেকে হারিয়ে ফেললো তা বুঝতেই পারেনি বইপ্রেমী ওই চোর। হুশ ফিরলো ধরা পড়ার পর।

ইতালির প্রাতি জেলার ওই বাড়িটিতে বেলকনি দিয়ে প্রবেশ করেছিল ৩৮ বছর বয়সী অভিযুক্ত। শোবার ঘরে বিছানার কাছে টেবিলে হোমারের ইলিয়াড বিষয়ক বইটি চোখে পড়ে তার।

বাড়িটির ৭১ বছর বয়সী মালিক জানিয়েছেন, ঘুম থেকে জেগেই অভিযুক্ত ওই চোরকে বই পড়ায় ডুবে থাকতে দেখেন।

বইপ্রেমী চোরের খবরটি ইতালিতে বেশ সাড়া ফেলেছে। এতে অভিভূত হয়েছেন বইটির লেখকও। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ওই চোরকে বইটির একটি অনুলিপি পাঠাতে চেয়েছিলেন, যাতে সে তার পড়া শেষ করতে পারে।

ধরার পড়ার পর যে বেলকনি দিয়ে রুমে প্রবেশ করেছিল সেই একই বেলকনি দিয়ে তাৎক্ষণিক পালানোর চেষ্টা করেছিল অভিযুক্ত ওই চোর। তবে মুহুর্তেই তাকে আটক করা হয়।

আটক হওয়ার পর পুলিশকে সে বলেছে, এক পরিচিতজনের সঙ্গে দেখা করতে ভবনটি বেয়ে উপরে উঠেছিল। তার কথায়, ভেবেছিলাম, সেখানে একরাত থেকেই চলে যাবে। তবে বইটি দিকে চোখে পড়তেই পড়ার লোভ সামলাতে পারিনি। সেটি পড়তে শুরু করি।

দ্য গডস অব সিক্স ওক্লক বইটির লেখক জিওভানি নুচ্চি। বইটি মূলত দেবতাদের চোখে হোমারের ইলিয়াডের একটি ব্যাখ্যা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মেসেজারোকে নুচ্চি বলেছেন, অপূর্। যে ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে তাকে আমি খুঁজে পেতে চাই এবং বইটি তাকে দিতে চাই। কেননা, এটি অর্ধেক পড়ার মধ্যেই তাকে আটক করা হয়ে থাকতে পারে। আমি চাই তিনি এটি পড়ে শেষ করুক।

তিনি আরো বলেন, এটি একটি পরাবাস্তব গল্প। আবার মানবিকও।

আটকের সময় অভিযুক্ত ওই চোরের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগে কিছু দামি জামা-কাপড় পাওয়া যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় একই ভবনের অন্য একটি বাসা থেকে সেগুলো চুরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নুচ্চি আরো জানান, তার প্রিয় দেবতা হার্মেস, যিনি চৌর্যবৃত্তির দেবতা। তিনি মজা করে বলেন, একইসঙ্গে তিনি সাহিত্যেরও দেবতা। এটি একদম পরিষ্কার, সবকিছুই মিলে যায়।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: