শাপলা বাংলার নদী জল জলাশয়ের শোভা। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। দেখলেই মন ভরে যায়। গ্রামবাংলার অকৃত্রিম রুপছায়া মায়া সবই যেন ধারণ করে আসছে শাপলা। এসব কারণেই জাতীয় ফুলের মর্যাদা দিয়ে আরও আপন করে নেয়া হয় ফুলটিকে।
সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের চারালকান্দি, লোহাগাড়া, কর্পূর, মধুপুর, চর মধুপুর, শালিখা, গাড়ামারা, পশ্চিম তেকানী, মোল্লাপাড়া, শ্যামপুর, হুয়াকুয়া, পাকুল্লা, নিশ্চিন্তপুর, গনসারপাড়া, পোড়াপাইকর, কোড়াডাঙ্গা, গোবরচড়া বিল, সাতবিলাসহ বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ে শাপলা ফুলের বিপুল সমাহার।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় শাপলা ফুলে ভরে গেছে নদনদী, জলাশয় ও বিলজুড়ে। গ্রামীণ প্রকৃতির এই শাপলা ফুলের বাহারী রঙে ছেয়ে গেছে গোটা উপজেলার নদী, নালা, খালবিলে। শাপলা পদ্মগোত্রের ফুল। জলে নিমজ্জিত নরম দন্ডের উপরিভাগে এ ফুল ফুটে থাকে।
১৩-১৫টির মতো পাঁপড়ি হয়। পাঁপড়ির মাঝখানে হলুদ রঙের পরাগদানী থাকে। লাল এবং নীল রঙের ফুলও হয় বটে। মূল রঙ সাদা। শাপলার পাতাও খুব সুন্দর। বড় গোলাকার পাতা পানির উপর চমৎকার ভাবে ভেসে থাকে। গ্রামের মানুষেরা শাপলা ভাসমান বাগানের মধ্যে দিয়ে ডিঙি চালিয়ে যেতে যেতে অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করেন।
কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে তুলে নেয় দু’ একটি শাপলা ফুল। দুরন্ত কিশোর কিশোরিরা পানিতে নেমে হাত ভর্তি করে শাপলা নিয়ে বাড়ি ফেরে। গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা এক সময় বিল ঝিলে ডুব দিয়ে শালুক তুলে আনতো। শাপলার শেকরের সঙ্গে যুক্ত থাকা শালুক সিদ্ধ করে খাওযার চল ছিল একসময়।
এখন গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রুত বদলাচ্ছে। মাটির নিচ থেকে শালুক তুলে খাওয়ার লোক তেমন চোখে পড়ে না। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে নদীনালা, খালবিল ও আবদ্ধ জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতীয় ফুল শাপলা ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, অযত্ন, অবহেলা আর কৃষি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে শাপলা ফুল আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
দৈনিক বগুড়া