শুরু হয়েছে শীতের হাওয়া। সন্ধ্যার পর রাতের গভীরতায় কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। হেমন্তের দিনগুলোর উষ্ণতার মাঝেই শীতের বুড়ি এসে যেন জবরদখল করে নিচ্ছে উপজেলার আশেপাশের প্রকৃতি। তাই শীতের প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে আগাম প্রস্তুতি নিতে সাধারণ মানুষ ভীড় করছে লেপ-তোষকের দোকানে। এখন এসব দোকানের কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানের চেয়ে উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রভাব সাধারণত একটু বেশি। তাইতো শীত আসার আগেই উপজেলার সাধারণ মানুষ সাধ্যমত প্রয়োজন অনুসারে গরম লেপ-তোষক তৈরি করে নিচ্ছে। অনেকে পুরাতন লেপ মেরামত করেও নিচ্ছেন।
এ কারণেই অন্যান্য সময়ের চেয়ে এসময় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। এতে উপজেলার লেপ তোষকের দোকানগুলোতেও কাজের চাপ অনেক বেড়েছে। গতকাল সোমবার উপজেলা সদরের শহর তলায় একতা শয্যালয় এর মালিক শেখ আইয়ুব আলী জানান, বছরের অন্যান্য সময় তাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধ থাকে।
সাধারণত কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণ মাস শুরুর পর থেকেই তাদের ব্যবসা শুরু হয়। এসময় তারা লেপ-তোষক তৈরির পাশাপাশি বিছানার চাদর, বালিশ ও সোফার কভারসহ দরজা জানালার পর্দার কাপড় বিক্রি করে থাকে। শিমুল ও কার্পাস তুলার মূল্য বৃদ্ধি ও দুষ্প্রাপ্যতার কারণে লেপ-তোষকে এ তুলা সাধারণত আর ব্যবহার হয় না।
এখন সাধারণ মানুষ গার্মেন্টস এর তুলা ও ঝুট দিয়ে লেপ-তোষক বানিয়ে নেয়। ভাল কভারসহ একটি লেপ তৈরি করতে ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা খরচ হয়। বাজারে দেশি কম্বল অনেক কম দামে বিক্রি হওয়ায় এবং তুলা কাপড়সহ আনুসাঙ্গিক জিনিষ পত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।
এরপরও এখনও যারা তাদের পৈত্রিক এ ব্যবসা ধরে রেখেছেন, তারাও এ প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে পারছেন না। ফলে দিন দিন এ ব্যবসা সংকুচিত হয়ে আসছে। এরপরও শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে হাতেগোনা লেপ তোষকের যে কয়টি দোকান আছে সে দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
লেপ তোষকের এইসব দোকানের করিগরদের ব্যস্ততা মনে করে দিচ্ছে শীত আর বেশি দূরে নয়। অপরদিকে বিত্তবানরা ছুটছেন বিপণী বিতান ও নামিদামী কাপড়ের মার্কেটগুলোতে।
দৈনিক বগুড়া