সংগৃহীত
কয়েক বছরের তুলনায় বগুড়ায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাজারে চাঙা আলুর দাম। এতে হাসি ফুটেছে জেলার আলু চাষিদের মুখে। জানা যায়, গত বছরের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের আলু বীজ বপন মৌসুম শুরু হয়। ৬০ থেকে ৭০ দিনে আগাম জাতের এ আলুর ফলন হয় প্রতি বিঘা জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ মণ।
এরপর আমন ধান কেটে আলুর উৎপাদন বিঘাপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ মণ ফলন পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বগুড়ায় ৫৩ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল। আলু উৎপাদন হয়েছিল ১২ লাখ ২৪ হাজার টন। বগুড়াকে আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা ধরা হয়। আলু সারা বছর পর্যায়ক্রমে বিক্রির জন্য ৩৭টি হিমাগার গড়ে উঠেছে। সঠিক সময়ে পরিচর্যাসহ ছত্রাক নাশক ব্যবহারে জেলার সদর, শাজাহানপুর, কাহালু, শিবগঞ্জ, নন্দীগ্রাম, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় আলুর ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষণও বয়ে এনেছে ইতিবাচক ফল। নন্দীগ্রাম উপজেলার থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আবদুল আলিম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্য বছরের তুলনায় এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে। এ ছাড়া শুরু থেকেই বাজারে পাকরি, রোমানা, হাগরাই, ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, এস্টোরিক্স জাতের আলুর দামও বেশ ভালো রয়েছে। জমিতে বীজ, লাগানো, সার, ওষুধ, সেচসহ আলু তুলতে বিঘাপ্রতি ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ৯০ থেকে ১০০ মণ।
বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা দরে। এতে বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মুশিদুল হক জানান, এ বছর আলু চাষে আবহাওয়া ছিল উপযুক্ত। বিগত সময়ে প্রচুর কুয়াশা ও আবহাওয়ার আর্দ্রতা বেশি থাকায় আলুর নাভিধসা রোগে প্রান্তিক কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে এ বছর কৃষকেরা শুরু থেকে জমিতে সঠিক ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেন। ফলে আলুর রোগ দেখা যায়নি।
আলু চাষিরা উল্লেখযোগ্য মুনাফা পেয়েছেন। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মতলুবর রহমান জানান, গত মৌসুমে বগুড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলু আবাদ হয়। জেলায় ১৩ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮ হাজার হেক্টর জমি। উৎপাদন আশা করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর সঙ্গে আগাম আলুর আবাদ শুরু হয়েছে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। মাঠকর্মীরা মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে চাষিদের সচেতন করাসহ পরামর্শ দিয়েছেন।