বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

৫৭ বছরে এসএসসি পাশ করলেন বগুড়া জেলা পুলিশ সদস্য

৫৭ বছরে এসএসসি পাশ করলেন বগুড়া জেলা পুলিশ সদস্য

সংগৃহীত

৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাশ করে সবাইকে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন বগুড়ায় ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য৷ তাঁর নামে আব্দুস সামাদ। তিনি এ বছর নাটোর জেলার মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি  ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়েছেন

এই বয়সে তাঁর এমন সফলতায় বগুড়া জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আব্দুস সামাদ ১৯৬৮ সালে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ১৯৮৭ সালে ৮ম শ্রেণি পাশে  বাংলাদেশ পুলিশে চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করেন। চাকরিসূত্রে তিনি বগুড়ার শেরপুর, সদর ও নন্দীগ্রাম ডিএসবি, সদর কোর্ট এবং সর্বশেষ বগুড়া ট্রাফিকে কর্মরত আছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ছেলে ও মেয়েদের করেছেন উচ্চ শিক্ষিত।  তাঁর এখন চাকরির বয়স আছে ২ বছর ১০ মাস। চাকরি শেষে হোমিও চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। কিন্তু সেই কোর্সে ভর্তি হতে তার এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন৷ সিদ্ধান্ত নেন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২২ সালে তিনি নাটোর মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি  ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেই ইন্সটিটিউট থেকেই এ বছর তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং জিপিএ -৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। 

ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদ জানান, পারিবারিক অস্বচ্ছলতায় ৮ম শ্রেণি পাশ করেই পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেছিলাম।  আমার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উপর ছোট থেকেই দুর্বলতা ছিল। অবসরে যাওয়ার পর যেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করে সবার সেবা করতে পারি তাই চাকরির পাশাপাশি নিয়মিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করতাম। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার কোর্সে ভর্তি হতে এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট লাগে। তাই ২০২২ সালে সিদ্ধান্ত নেই এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার৷ অতঃপর নাটোরে একটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখান থেকে এ বছর এসএসসি পাশ করেছি। 

তিনি বলেন,  আমার আর চাকরি ২ বছর ১০ মাস সময় আছে। এখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিএইচএমএস কোর্সে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার। অবসরে যাওয়ার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে সবাইকে সেবা করতে চাই। 

তিনি আরও বলেন, আমার এই বয়সে আমার পরিবার ও ডিপার্টমেন্ট অনেক সহযোগিতা করেছে। আমার মা বেঁচে আছেন। তাঁর বয়স একশো। আজ যখন আমি পাশ করেছি তখন আমার মা আমার এই সফলতার কথা শুনে অনেক খুশী হয়েছেন। এই যাত্রা শুরু করার সময় অনেকেই অনেক কটু কথা বলেছেন। কিন্তু পরিবার ও ডিপার্টমেন্ট এর উৎসাহে আমি পিছ পা হইনি।

এ বিষয়ে বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( ট্রাফিক) সুমন  জানান, আমাদের ট্রাফিক বিভাগের সদস্য আব্দুস সামাদ ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাশ করেছেন৷ আমরা তার এই সফলতাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি এই বয়সে এসেও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চায়, আমি তার এই আলোকিত হওয়ার উদ্দেশ্যকে সাধুবাদ জানাই এবং তার ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করছি।

সর্বশেষ: