রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

রক্তিম পলাশের মনোহর মোহ!

রক্তিম পলাশের মনোহর মোহ!

সংগৃহীত

‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল এনে দে এনে দে নইলে বাঁধব না, বাঁধব না চুল...’- জাতীয় কবি নজরুলের সে হৃদয়গ্রাহী গানের আবহ বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আবারো ফুটেছে রক্তিম পলাশ।

যে ফুলের মনোহর মোহের টানে দিগবিদিক থেকে ছুটে আসছে পাখি, আলতো ঠোঁটের স্পর্শে এ ফুল থেকে ঐই ফুলে ছুটে বেড়াচ্ছে। সৌন্দর্য পিপাসু মানব মনও থেমে নেই। একেক মনে একেক মোহময়তা সৃষ্টি করছে পলাশ। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গল্প-আড্ডাতেও।

শুক্রবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী নগরীর বেশকিছু গাছে পলাশ ফুল দেখা গেছে। তবে এখনো অধিকাংশ গাছে ফুল ফুটেনি। ফুলের গুটি ধরেছে। যে গাছগুলোতে ফুল ফুটেছে, সে গাছগুলোতে পাখিদের আনাগোনা বেশি। পাখিদের আলতো ঠোঁটের চুম্বনে পলাশ ফুলের পাপড়ি খসে পড়ছে নিচে। আর পদ্মাপাড়ের ভ্রমণপিপাসুরা সে ফুল কুড়িয়ে কখনো প্রিয়জনের খোঁপায় তুলে ধরছেন। কেউ বা ছোট্ট শিশুর হাতে তুলে দিচ্ছেন। আবার কেউ পরম যন্ত্রে মাটিতে পড়ে থাকা ফুলটা তুলে ধুলা পরিষ্কার করে হাতে নিয়েই হেঁটে চলেছেন। তবে পলাশের মোহ ভ্রমণপিপাসুদের মন যে এড়াতে পারছে না তা উপলধ্বি করা যাচ্ছে গাছের নিচে কিছুক্ষণ অবস্থান নিলেই।

নগরীর পঞ্চবটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ জায়গা নিয়ে একটি পলাশ গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। আশেপাশে অন্য কোনো গাছ নেই। নিচে দৃষ্টিসীমা অতিক্রম করে বেয়ে চলেছে প্রমত্তা পদ্মা। তবে দৃষ্টিসীমার মধ্যে রয়েছে জেগে ওঠা চরের সবুজ ফসলের এক বিশাল রাজ্য। পলাশ গাছটিকে সামনে দাঁড়িয়ে যে রাজ্যকে আরো ভিন্ন সৌন্দর্যে আবিষ্কার করা যায়। 

তবে খনিকের আক্ষেপের বিষয় হলো- গাছটিতে হাতেগোনা কয়েকটা ফুল ধরেছে মাত্র। সিংহভাগই এখনো গুটি। তারপরও এ গাছটির আশেপাশে দিয়ে যারাই হেঁটে যাচ্ছে, পূর্বে তাদের গল্পের অনুসঙ্গ যায় হোক না কেন, হঠাৎই পলাশ ফুল হয়ে উঠছে গল্পের বিষয়। আর এভাবেই পলাশ ফুল নিয়ে যত স্মৃতি উঠে আসছে গল্পে গল্পেই।

বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে এ গাছের পাশ দিয়েই হেঁটে যাচ্ছিলেন মনিরুল ইসলাম। হঠাৎই পলাশ গাছ থেকে কিছু একটা আবিষ্কার করার চেষ্টায় থমকে দাঁড়ালেন। এরপরই কথা হয় প্রতিবেদকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, নাহ, মানে। তেমন কিছু না। তেমন বিশেষত্ব খুঁজতেও দাঁড়ায়নি। তবে পলাশ ফুল বাঙালির আবেগের কিছু জায়গা দখল করে আছে। নিজের অজান্তেই গাছটি দেখে দাঁড়ালাম। বিগত কয়েক বছর ধরেই গাছটিকে দেখছি। প্রতিবছর একেক রুপে আর্বিভূত হয়। অনেকটা পদ্মার মতোই বলা চলে। কিছু ফুল নিতে পারলে আরো ভালো লাগতো।

পলাশ মাঝারি আকারের পর্ণমোচী বৃক্ষ। তবে পলাশ গাছ তার ফুলের জন্যই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। বসন্তে এ গাছে ফুল  ফোটে। রাজশাহীতে কিছু গাছে অগ্রিম এই ফুল এসেছে। টকটকে লাল ছাড়াও হলুদ ও লালচে কমলা রঙের পলাশ ফুলের মনকাড়া সৌন্দর্যের মায়া।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: