সংগৃহীত
মা শব্দটি অতি ছোট। তবে এর চেয়ে মধুর শব্দ এই পৃথিবীতে আর নেই। মা শব্দটির ভেতরে রয়েছে বিশাল এক মমত্ববোধ। আপনাকে পৃথিবীতে আনতে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন মা।
গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান জন্মদান, জন্মের পর দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ বড় হওয়া পর্যন্ত নানাবিধ কষ্ট সহ্য করেন মা। সন্তানকে সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করেন মা। এই মা-ই সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন।
কোরআনে বর্ণিত আছে-আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়। তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা-বাবার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১৫)।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘মা-বাবাই হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত, ৪২১)
অপর এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, মহান আল্লাহ তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে হজের সাওয়াব দান করেন। (বায়হাকি, মিশকাত, ৪২১)।
ইসলামে মা-বাবা দুজনের সঙ্গে সদাচারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে বাবার তুলনায় মায়ের অধিকার ও হক বেশি। মায়ের অধিকারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন রাসূল সা.।
একবার এক সাহাবি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার সুন্দর ব্যবহার পাওয়ার সবচেয়ে বেশি হকদার কে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবে ঘোষণা করলেন, তোমার মা।
সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমার মায়ের পরে আমি কার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করব? আল্লাহর নবী তাগিদ দেয়ার জন্য বললেন, তোমার মায়ের পরেও তোমার মায়ের অধিকার পালন করতে হবে। তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ তোমাকে করতে হবে। এভাবে তিনবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়ের সঙ্গে সদাচরণ করার কথা বলেছেন।
চতুর্থবার বলেছেন, অতঃপর তুমি তোমার বাবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করবে। (বুখারি ও মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এক. সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া দুই. মুসাফিরের দোয়া এবং তিন. অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া অত্যাচারীর বিরুদ্ধে’ (আবু দাউদ-১৫৩৮)।
ইসলামে মা বাবার হক পালনে কঠোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: Rtv News