বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

অতি উত্তপ্ত এক্সোপ্ল্যানেটে মিলল ‘লোহার বাতাস’

অতি উত্তপ্ত এক্সোপ্ল্যানেটে মিলল ‘লোহার বাতাস’

সংগৃহীত

সম্প্রতি অতি উত্তপ্ত এক এক্সোপ্ল্যানেটে ‘লোহার বাতাস’ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ডব্লিউএএসপি-৭৬বি’ নামের এই এক্সোপ্ল্যানেট সম্পর্কে সম্প্রতি বিস্ময়কর এই আবিষ্কারটি করেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ জেনিভা (ইউএনআইজিই)’ ও ‘প্ল্যানেটস ন্যাশনাল সেন্টার অফ কম্পিটেন্স ইন রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানীসহ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল।

এ গ্রহটিকে প্রায়ই ‘অতি-উষ্ণ বৃহস্পতি’ নামে ডাকা হয়ে থাকে। এর তাপমাত্রা প্রায়ই দুই হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে গিয়ে গ্রহটিতে চরম আবহাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

২০১৩ সালে আবিষ্কারের পর থেকেই গ্রহটি নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। উদ্ভট ও তীব্র বায়ুমণ্ডলের কারণে গ্রহটিকে খতিয়ে দেখা বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আগের বিভিন্ন গবেষণায় রাতের বেলায় গ্রহটিতে লোহার বৃষ্টিপাত ও এর উপরের বায়ুমণ্ডলে বেরিয়াম উপাদানের উপস্থিতি মিলেছিল। এমনকি গ্রহটির দিন ও রাতের বিভিন্ন দিক আলাদা করে এমন রেখায় একটি ‘রামধনু’ প্রভাবেরও প্রমাণ পেয়েছিলেন গবেষকরা।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দিনের বেলা গ্রহটিতে লোহা বহনকারী শক্তিশালী বাতাস শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

দূরবর্তী বিশ্বের অদ্ভুত আবহাওয়ার বিভিন্ন নিদর্শনের মধ্যে নতুন ধারণা দিয়েছে এই ‘লৌহ বাতাস’, যেখানে চরম জলবায়ু রয়েছে এমনসব গ্রহ কীভাবে আচরণ করে সে সম্পর্কে আরও সূত্র দেবে এটি।

‘ডব্লিউএএসপি-৭৬বি’ একটি গ্যাসীয় দৈত্য, যা সঙ্গে আমাদের সৌরজগতের বৃহস্পতি গ্রহের মিল আছে। তবে গ্রহটি নিজের তারা’র সান্নিধ্যে থাকার কারণে অনেক বেশি উষ্ণ।

এর দিনের তাপমাত্রা দুই হাজার চারশ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, যা মেঘ গঠনের জন্য অনেক গরম হয়ে ওঠে। গ্রহটির এই দিকটায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এর নিম্ন বায়ুমণ্ডল থেকে উপরের স্তরে লোহার বিভিন্ন পরমাণু উড়ে যাচ্ছে।

এ নতুন আবিষ্কারটি করা হয়েছে চিলির ‘ভেরি লার্জ টেলিস্কোপে (ভিএলটি)’ অবস্থিত ‘এসপ্রেসো’ নামের একটি উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্র ব্যবহার করে ‘ডব্লিউএএসপি-৭৬বি’ নিয়ে গবেষণা করে। নির্ভুলতার সঙ্গে আলো পরিমাপ করার সক্ষমতার জন্য পরিচিতি রয়েছে ‘এসপ্রেসো’র।

‘ডব্লিউএএসপি-৭৬বি’ থেকে আসা আলো বিশ্লেষণ করে এর বায়ুমণ্ডলে লোহার পরমাণুর গতিবিধি শনাক্ত করে গবেষণা দলটি। ‘হাই-রেজোলিউশন ইমিশন স্পেকট্রোস্কোপি’ নামে পরিচিত এই পদ্ধতিটি এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক চেহারা ও গতিবিদ্যা গবেষণার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।

এই লোহার বাতাসের আবিষ্কার ‘ডব্লিউএএসপি-৭৬বি’-এর বায়ুমণ্ডল কীভাবে আচরণ করে তার একটি পরিষ্কার ছবি তৈরি করতে সহায়তা করেছে বিজ্ঞানীদের।

সম্ভবত গ্রহের বায়ুমণ্ডলের একটি গরম জায়গার মাধ্যমে চালিত হয় এইসব বাতাস। এমনকি এসব বাতাস গ্রহের সার্বিক জলবায়ু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সূত্রও সরবরাহ করে।

সূত্র: জাগো নিউজ ২৪

সর্বশেষ: